ডেস্ক নিউজ : ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন এই দম্পতি। আজও এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়নি।
ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে ওই দিন সাগর-রুনির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের দেহ ছুরিকাঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়।
পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ পর্যন্ত ৫৩ বার সময় নিয়েও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তারা।
র্যাবও নতুন করে কিছুই জানাতে পারছে না। তদন্তে নতুন কিছু নেই বলে শনিবারও জানিয়েছেন র্যাবের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার ৫৩তম দিন ছিল।
সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৩ মার্চ ধার্য করেছে আদালত। আদালত সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন। অন্য আসামিরা হল- বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী এনাম আহমেদ (হুমায়ুন কবির), রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারো গিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ।
আসামিদের প্রত্যেককে একাধিবার রিমান্ডে নেয়া হলেও তাদের কেউই এ পর্যন্ত স্বীকারোক্তিমূলক কোনো জবানবন্দি দেয়নি।
হত্যাকাণ্ডস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য বহু অর্থ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো আলামতের ডিএনএ পরীক্ষা করে ঘটনাস্থলে দুই জন অজ্ঞাত পুরুষ ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে। ওই দুই অজ্ঞাত আসামিকে শনাক্ত করতে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
এই সাংবাদিক দম্পতি খুন হওয়ার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের ঘোষণা দেন। সন্দেহভাজন হিসেবে আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। কিন্তু প্রকৃত খুনিরা আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে।